ত্বকের বিভিন্ন রোগ:
একজনের ত্বক ও নকের দিকে তাকালে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যেতে পারে। প্রায়ই আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- ত্বক কঠিন হয়ে যাওয়া, ত্বক কুচঁকে যাওয়া, ফেটে যাওয়া কিংবা শুষ্ক হয়ে যাওয়া। উপরোক্ত সমস্যার মূল কারণ দেহে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব। অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ,ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, কড়া রোদে পোড়া, অতিরিক্ত ধূমপান করা ইত্যাদির ফলে দেহে ফ্রি র্যাডিকেলের প্রভাব বেড়ে যায় এবং এনজাইমের ততপড়তা কমে যায়। ফলে ত্বকেও ফ্রি র্যাডিকেলের অততপড়তা বেড়ে যায় এবং ত্বকের বিবিধ সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- ত্বক কুচঁকে যাওয়া, দাগ পড়া এবং ক্যান্সার পর্যন্ত হওয়া।
দেহে উপস্থিত এনজাইমগুলো ত্বকের নানাবিধ সমস্যা রোধকল্পে ফ্রি র্যাডিকেলগুলোকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করে। ত্বক হল দেহের সর্ববৃহত অঙ্গ। এটি অসংখ্য তন্তু দ্বারা গঠিত। এতে উপস্থিত কোলাজেন তন্তুগুলো আঁশ জাতীয় ইলাস্টিক জালের সমষ্টি, যা সংযোজক কলা হিসেবে কাজ করে। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা, দৃঢ়তা, মসুণতা আসে মূলত কোলাজেন আঁশের জন্যই। আমাদের অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপনের ফলে ও ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে কিছু চর্মরোগ দেখা দেয়। যেমন :
কিছু কিছু চর্মরোগ আছে যা গরম এলে দেখা দেয় আবার শীত এলে আপনা আপনি করে যায়। যারা ঘামাচিতে ভোগেন তারা লক্ষ্য করে থাকবেন গরম চলে গেলে ঘামাচি চলে যায়। যারা দাঁদে ভোগেন তারা দেখবেন গরমকাল এলেই তা বাড়তে থাকে এবং প্রচন্ড শীতে চুলকায়। যাদের শরীরে ছুলি হয় তারা লক্ষ্য করলে দেখবেন শীত এলে ছুলি আর দেখা যায় না। কিন্তু গরমকাল আসতে না আসতেই আবার ফুটে ওঠতে থাকে।
প্রথমে দাঁদের কথায় আসা যাক। গরম এলে শরীরে ঘাম হয় এবং ভেজা থাকে। ফলে শরীরে ছত্রাক বা ফাংগাস জন্মায়। মনে রাখতে হবে ভেজা শরীর হল ছত্রাক জন্মানোর উর্বর ক্ষেত্র। তাই যাদের শরীরে ঘাম বেশি হয়, তারা সবসময় ঘামে ভেজা কাপড় এড়িয়ে চলবেন। কাপড় ঘামে ভিজে চুপ চুপ হয়ে আছে অথচ আপনি তা পাল্টাবেন না তা হলে আপনার শরীরে দাঁদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আবার যারা শারীরিকভাবে মোটা তাদের দেহে ভাঁজযুক্ত হতে দেখা যায়, সেই ভাজের মধ্যে ঘাম আর ময়লা বেশি জমে থাকে বলে দেহের ভাঁজযুক্ত স্থানে ছত্রাক বা ফাংগাস বেশি হতে দেখা যায়। ছত্রাক বা ফাংগাসজনিত যেসমস্ত চর্মরোগ আমাদের দেশে দেখা যায় সেগুলোকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- ১. দাঁদ ২. ছুলি ৩. ক্যানডিডিয়াসিস
এই তিন ধরনের ছত্রাক প্রজাতির সকলেই মূলত ত্বকের বাইরের অংশকে আক্রমণ করে এবং সেই আক্রমণ স্যাতঁস্যাঁতে, নোংরা এবং ঘর্মাক্ত দেহে বেশি দেখা যায়।